Wednesday, 18 May 2022

কালো ধান চাষ করেছে তরুণ কৃষক সাদেকুল তেতুলিয়াই

তেঁতুলিয়ায় কালো ধান চাষ করেছে তরুণ কৃষক সাদেকুল

দেশের উত্তরের সীমান্ত পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ব্ল্যাক রাইস বা কালো ধানের চাষ শুরু হয়েছে। ইসলামবাগ গ্রামে এ ধান চাষ করেছেন তরুণ কৃষক সাদেকুল ইসলাম সুষম। এই ধান দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন অনেকে। ফলন ভাল এবং দামি হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরাও এ ধান চাষের উদ্যোগ নিচ্ছেন।
সাদেকুল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনই হাট ইউনিয়নের ইসলামবাগ গ্রামের ফেরদৌস কামালের ছেলে। ঢাকা কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করে বর্তমানে বাবার জমির দেখাশোনা ও চাষাবাদ করছেন। ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খোঁজ খবর নিয়ে ঢাকার গাজীপুর থেকে এ কালোধানের বীজ সংগ্রহ করেন তিনি। 

সাদেকুল জানান, করোনাকালে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে নিজেদের ৬০ শতক জমিতে পরীক্ষামূলক ব্ল্যাক রাইস প্রজাতির ধানের চাষ করেন তিনি। গত জানুয়ারি মাসের শেষে এই ধান রোপণ করেন। মাত্র ৩ মাসের মধ্যে প্রত্যেক গাছেই প্রচুর পরিমাণে ফলন ধরেছে। কিছুদিনের মধ্যেই মাড়াই শুরু হবে। ধানগুলো দেখতে যেমন কালো, চালও দেখতে তেমন কালো।  


তিনি বলেন, বাংলাদেশে দশ প্রকারের কালো ধান চাষ হয়। তবে আমি তিন প্রকারের ধান চাষ করেছি। বিঘাপ্রতি জমিতে ১৫-১৮ মণ ধান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূল্য যদি আকর্ষণীয় হয় এবং চাহিদা যদি থাকে তাহলে আগামীতে ব্লাক রাইসের চাষ আরও বৃদ্ধি করবো। কেননা, এ ধান চাষে অতিরিক্ত ঝুঁকি এবং খরচ নেই। এটি সাধারণ ধানের মত চাষ হলেও অতিরিক্ত সার বা পানির প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় না আলাদা কোনো পরিচর্যারও। অথচ এ ধানের দাম অনেক বেশি। ২ বিঘা জমিতে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ধান বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন তিনি। এই ধানের উপকারিতার কথা শুনে অনেক কৃষকই বীজ সংগ্রহের জন্য তাকে বলে রেখেছেন।  

তেঁতুলিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ ধানের চাল উৎপাদন করে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া গেলে তা দেশের কৃষি অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

উল্লেখ্য, ব্ল্যাক রাইস একটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ধান; ফলে ক্যান্সার প্রতিরোধী। ব্ল্যাক রাইসের চালে মূলত ডায়াবেটিস, স্নায়ুরোগ ও বার্ধক্য প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এতে ফাইবার অনেক বেশি থাকে। ফলে এ চালের ভাত শরীরে গ্লুকোজ তৈরি করে খুব ধীর গতিতে। ফলে শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ কারণে এ চালকে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব কার্যকর বলা হয়।  এছাড়া আমিষ, ভিটামিন, জিংক, খনিজ পদার্থসহ অন্য উপাদানগুলো সাধারণ চালের চেয়ে অন্তত তিনগুণ বেশি।  বর্তমানে পৃথিবীর নতুন সুপার ফুড হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে এ ধানকে।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios:

আপনার একটা সুন্দর মতামত দিন