Saturday, 2 April 2022

বিতর্কিত_প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা

#বিসিএস ও অন্যান্য চাকরির #বিতর্কিত_প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা
Live MCQ #তথ্যকল্পদ্রুম_সিরিজ
#পোস্ট - ০১০

🟢 আজকের বিষয়:
বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চায়ের চাষ শুরুর ইতিহাস এবং কনফিউজিং ১৮৫৭/১৮৫৪/১৮৪৭ সালগুলো নিয়ে আলোচনা।

🟢 আলোচনা:
বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে কখন চায়ের চাষ শুরু হয়? - এটি বিসিএসসহ অন্যান্য সরকারি চাকুরীর পরীক্ষায় একটু খুবই কমন প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে বাজারের প্রচলিত গাইড বইগুলোতে বিভিন্ন রকম উত্তর দেওয়া রয়েছে। তাই এই বিষয়ে আমাদের ব্যবহারকারীসহ সকলের কনফিউশন দূর করতে তথ্য কল্পদ্রুমের এই আয়োজনটি সাজানো হয়েছে।

❏ বাংলাদেশে চা শিল্প:
চা বাংলাদেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল। উনিশ শতকে (১৮০০ সাল/শতাব্দী) ভারতবর্ষের #সিলেট এবং #আসাম অঞ্চলে চা শিল্পের বিকাশ ঘটে। ১৮০০ শতাব্দীর প্রথম ভাগে আসাম ও তৎসংলগ্ন এলাকায় চা চাষ শুরু হয়। প্রধানত ব্রিটিশ (ইংরেজ, স্কটিশ, আইরিশ) চা-করগণ (Tea Planters) সিলেটের টিলাভূমি এবং আসামের উচ্চভূমিতে ব্যাপক এবং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চা উৎপাদনের সূচনা করে। #১৮৩৯_সালে বেশকিছু ব্রিটিশ পুঁজিপতি এবং ভারতীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ী যেমন প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর, বাবু মতিলাল শীল, হাজী হাশেম ইস্পাহানি এবং অন্যান্যদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় #আসাম_টি_কোম্পানি। লন্ডনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কোম্পানির নাম ঘোষণা দেওয়া হয়। এই কোম্পানি গঠনের পরপরই কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত #বেঙ্গল_টি_এসোসিয়েশন এর সঙ্গে একীভূত হয়।

➤ রবার্ট ব্রুস ১৮৩৪ সালে আসামের উঁচু অঞ্চলে চা গাছের সন্ধান পান। এরপর ১৮৫৫ সালে সিলেটের চাঁদখানি টিলায় দেশীয় জাতের চা গাছের সন্ধান মেলে। একই সময়ে খাসি ও জৈন্তা পাহাড়েও ‘বন্য প্রজাতির’ চা গাছের সন্ধান পাওয়া যায়। এগুলোর কোনটিই চাষের চা গাছ ছিলো না।

তার পূর্বে,
➤ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার কর্ণফুলী নদীর তীরে চা আবাদের জন্য ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে জমি বরাদ্দ হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেখানে চা চাষ বিলম্বিত হয়।
➤ #১৮৪০_খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম শহরের বর্তমান চট্টগ্রাম ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় একটি চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যা ‘#কুন্ডদের_বাগান’ নামে পরিচিত। এই বাগানটিও প্রতিষ্ঠার পরপরই বিলুপ্ত হয়ে যায়।
➤ অতঃপর #১৮৫৪_খ্রিস্টাব্দে মতান্তরে #১৮৪৭_খ্রিস্টাব্দে সিলেট শহরের এয়ারপোর্ট রোডের কাছে মালনীছড়া চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়।
মূলতঃ মালনীছড়াই বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্যিক চা বাগান।

➤ দেশ স্বাধীনের পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশে শুধুমাত্র দুইটি জেলায় চা আবাদ করা হতো, একটি সিলেট জেলায় যা ‘#সুরমা_ভ্যালী’ নামে পরিচিত ছিল, আর অপরটি চট্টগ্রাম জেলায় যা ‘#হালদা_ভ্যালী’ নামে পরিচিত ছিল।

বর্তমানে বৃহত্তর সিলেটের সুরমা ভ্যালীকে ছয়টি ভ্যালীতে ভাগ করা হয়েছে।
যথা:
☛ লস্করপুর ভ্যালী,
☛ বালিশিরা ভ্যালী,
☛ মনু-দলই ভ্যালী,
☛ লংলা ভ্যালী এবং
☛ নর্থ সিলেট ভ্যালী।

☛ হালদা ভ্যালী বর্তমানে ‘চট্টগ্রাম ভ্যালী’ নামে পরিচিত।৷

বাংলাদেশের চা বাগানগুলির মালিকানা প্রধানত তিন ধরণের -
ক) স্টারলিং কোম্পানি (ইউরোপীয় বিশেষত ব্রিটিশ মালিকানা),
খ) বাংলাদেশি কোম্পানি এবং
গ) ব্যক্তি মালিকানা।

চা শিল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানসমূহ:
❏ চা বোর্ড:
🢧 ১৯৫১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। এটি চট্টগ্রামে অবস্থিত।
🢧 জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৪ জুন ১৯৫৭ সাল থেকে ২৩ অক্টোবর ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত তৎকালীন টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
🢧 চা বোর্ডের অধীনে বর্তমানে চা বাগানের সংখ্যা ১৬৭টি।

❏ বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (BTRI):
🢧 বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনষ্টিটিউটটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ চা বোর্ডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম
🢧 ১৯৫৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘টি রিসার্চ স্টেশন’ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ টি রিসার্চ স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটে উন্নীত করা হয়। এর প্রধান কার্যালয় - মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত।

🟢 উপসংহার:
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় -
✔✔ বাংলাদেশে প্রথম চা চাষ করা হয় - ১৮৪০ সালে চট্টগ্রামে।
✔✔ বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে প্রথম চা চাষ হয় - ১৮৫৪ সালে মতান্তরে ১৮৪৭ সালে সিলেটের মালনীছড়ায়। (পরীক্ষায় আসলে অপশন বিবেচনা করে উত্তর করতে হবে)
❌ কোনভাবেই উত্তর ১৮৫৭ সাল হবে না।

🔗 রেফারেন্স:
✔ বাংলাদেশ চা বোর্ড ওয়েবসাইট
✔ বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট ওয়েবসাইট
✔ বাংলাপিডিয়া
----------------------------------
🟪 তথ্যকল্পদ্রুম সিরিজের সকল পোস্ট একসঙ্গে এখানে পাবেন - https://www.facebook.com/hashtag/তথ্যকল্পদ্রুম/?__gid__=642872336101321
----------------------------------
⚡ "তথ্যকল্পদ্রুম সিরিজ" কী? ⚡
'কল্পদ্রুম’ শব্দের অর্থ কল্পবৃক্ষ, অর্থাৎ যে বৃক্ষের নিকট যা কামনা করা হয় তা-ই পাওয়া যায়।
এর সাথে মিলিয়ে 'শব্দকল্পদ্রুম' নামে রচিত হয়েছিল একটি বিখ্যাত সংস্কৃত অভিধান। সংস্কৃত ভাষায় গদ্যে রচিত সর্ববৃহৎ এ অভিধানটি ছিল বাংলা হরফে মুদ্রিত।
কথিত আছে, এমন কোনো সংস্কৃত শব্দ নেই যা এ কোষগ্রন্থটিতে পাওয়া যায় না। তাই, এর নাম রাখা হয় ‘শব্দকল্পদ্রুম’।
তেমনি, আমরাও "Live MCQ  #তথ্যকল্পদ্রুম" নামে এই সিরিজটি ২৭ এপ্রিল, ২০২১ থেকে চালু করেছি।
 
উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিসিএস এবং চাকরির প্রস্তুতিতে যেসকল প্রশ্ন ও তথ্যে বিভিন্ন সোর্সে গরমিল আছে, আরও আছে নানান বিতর্ক; সেসকল তথ্য ও প্রশ্নের একটা সংগ্রহশালা তৈরি করা।
অর্থাৎ, কল্পদ্রুমের কাছে যেমন যা কামনা করা হয় তা-ই পাওয়া যেত, তেমনি Live MCQ তথ্যকল্পদ্রুম সিরিজেও একটা সময় পরে আপনি যেকোনো বিভ্রান্তিকর ও বিতর্কিত তথ্যের একটা সমাধান পেয়ে যাবেন।
২০১৭ সাল থেকে Live MCQ এর যাত্রা শুরু হয়েছিল। কালের পরিক্রমায় আমরা এরকম অসংখ্য প্রশ্ন পেয়েছি, বাজারের অনেক গাইড বইতে যেগুলোর ভুল উত্তর দেয়া আছে।
এমনকি, বোর্ড বইতেও বেশ কিছু ভুল তথ্য পাওয়া গেছে। Live MCQ এর পরীক্ষাগুলোতে এই ধরণের ভুল তথ্যগুলো স্বাভাবিকভাবেই আমাদের সামনে এসেছিল, বিস্তর আলোচনাও হয়েছে।
সমস্যা হচ্ছে, বিক্ষিপ্তভাবে থাকায় আপনাদের পক্ষে সবগুলো তথ্য নজরে রাখা সম্ভব নয়। ধরে নেয়া যায় যে, Live MCQ তথ্যকল্পদ্রুম সিরিজ এই সমস্যার সমাধান করবে।
 
একটা সময় পরে মোটামুটি সব ধরণের কনফিউজিং প্রশ্ন সংক্রান্ত আলোচনা এখানে যুক্ত হয়ে যাবে। এর মাধ্যমে বিসিএস ও অন্যান্য চাকরির প্রস্তুতিতে Live MCQ আপনাদেরকে আরও কিছুটা সহযোগিতা করতে পারবে বলে আশা রাখছি।
 
পাশপাশি, এই সিরিজ নিয়ে আপনাদের যেকোন গঠনমূলক পরামর্শ থাকলে কিংবা কোন তথ্য নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন অনুভব করলে অনুগ্রহ করে Live MCQ ফেসবুক পেজে মেসেজ দিয়ে জানাবেন।
--------------------
সিরিজের সকল পোস্ট Live MCQ অফিশিয়াল ফেসবুক গ্রুপ এবং পেজে নিয়মিত পাবলিশ করা হবে।
🟪 তথ্যকল্পদ্রুম সিরিজের সকল পোস্ট একসঙ্গে এখানে পাবেন - https://www.facebook.com/hashtag/তথ্যকল্পদ্রুম/?__gid__=642872336101321
📢 Live MCQ অফিশিয়াল ফেসবুক গ্রুপ - https://www.facebook.com/groups/livemcqbcsmodeltest/
📢 Live MCQ অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ - https://www.facebook.com/livemcq/
---------------------------------
ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
পুনশ্চ: শব্দকল্পদ্রুম নামে সুকুমার রায়ের আবোল তাবোল গ্রন্থে একটি বিখ্যাত কবিতাও আছে।
----------------------------------
ঘরে বসেই বিসিএস এবং অন্যান্য চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে -
🟢 Live MCQ এন্ড্রয়েড অ্যাপ (5 MB) - https://play.google.com/store/apps/details?id=com.livemcq.livemcq
অথবা,
🟢 Live MCQ ওয়েবসাইটঃ https://livemcq.com/app/
  প্রতিযোগিতার পরীক্ষায় প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই প্রস্তুতি নিন।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios:

আপনার একটা সুন্দর মতামত দিন